মোবাইল টাওয়ার থেকে বিকিরণ মানবদেহ বা অন্যান্য প্রাণী বা উদ্ভিদের ক্ষতি করে এমন কোনো প্রমাণ নেই। কিছু মানুষের মধ্যে এক ধরনের কাল্পনিক ভয় কাজ করে যে মোবাইল টাওয়ারের কারণে ক্যান্সারের মতো নানা ধরনের সমস্যা হয়। এটা মোটেও বিজ্ঞানসম্মত নয়।
শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টারস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত এক গোলটেবিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার এবং আলোচনায় সরকারি নীতি নির্ধারকরা ছাড়াও অংশ নেন মোবাইল খাত ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিআরসির উপপরিচালক ড. সামসুজ্জোহা। আলোচনা সঞ্চালন করেন টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহেদী।
বক্তারা বলেন, এগুলো মানুষের কল্পনা। মূলত দুই ধরনের বিকিরণ আছে আয়োনইজড ও নন আয়োনাইজড। অতিবেগুনি রশ্মি, গামা রশ্মি, এক্স-রে ইত্যাদি আয়নিত, যা মানবদেহের ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু মোবাইল ফোন, মোবাইল টাওয়ার, রাউটার সবই নন-আয়নাইজড। এতে ক্ষতিকারক কিছু নেই।
আরও পড়ুন: উদ্ভাবনে অবদানের জন্য দুইটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করল অপো
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে যে ধরনের মোবাইল টাওয়ার ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হয়, দুনিয়ার আর সব দেশেও ঠিক একই ধরনের যন্ত্রই ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া বাংলাদেশের সকল অপারেটর মোবাইল টাওয়ার স্থাপনে যে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়, তা মেনে চলে। বিটিআরসি সময়ে সময়ে সারাদেশে এসব টাওয়ারের বিকিরণ মাত্রা পর্যবেক্ষণ করে এবং দেখে যে এগুলো সহনীয় মাত্রার নিচে।
তাই ভয়ের কিছু নেই বলে জানান বক্তারা।
তারা বলেন, রাজধানীর অন্তত তিনশ’ জায়গায় মোবাইল সাইট স্থাপন করা হচ্ছে না, যেগুলো জরুরি। এই ভয় দূর করতে সচেতনতা বাড়াতে হবে। মানুষ উচ্চ মানের মোবাইল সেবা চায়; তারা সাইট সেট আপ করার অনুমতি দেয় না. এটি সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্যই অভিজ্ঞতা।
বক্তারা উচ্চমানের সেবা পেতে মোবাইল সাইট সম্প্রসারণে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, অনেকেই অবৈধভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কে জ্যামার, রিপিটার, বুস্টার বসিয়ে দিচ্ছেন। এগুলো স্থাপন করা যাবে না। এগুলো অবৈধ। এতে নেটওয়ার্কেরও ক্ষতি হচ্ছে। গ্রাহকরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা তরঙ্গ ব্যবহারে অপারেটরদের বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আলোচনায় অংশ নেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এহসানুল কবির, মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি এফেয়ারস অফিসার তাইমুর রহমান, রবির চিফ কর্পোরেট এন্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম, গ্রামীণফোনের কর্পোরেট এফেয়ারস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত, হেড অফ নেটওয়ার্ক সলিউশন্স মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা এবং এরিকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম, নকিয়া বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড আরিফ ইসলাম, হুয়াওয়ে লিমিটেড বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল মার্কেটিং ম্যানেজার এস এম নাজমুল হাসান, টাওয়ার কোম্পানি ইডটকোর হেড অব রেগুলেটরি এফেয়ারস মাসুদা হোসেন, এমটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.) প্রমুখ।
আরও পড়ুন: অগ্রণী ব্যাংকের স্মার্ট ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে নগদে ওয়ালেটে অ্যাড মানি চালু